প্রসঙ্গ ওয়েব ডিজাইনঃ কেন ও কিভাবে
ফ্রিল্যান্সিং শিখে অনেকেই দু’পয়সা কামাচ্ছেন। ওয়েব ডিজাইনিং এমনই একটি খাত যেখানে ফ্রিল্যান্সাররা আজকের বাজারে বেশ সফল। পেশাদার বা শৌখিন ওয়েব ডিজাইনারদের মধ্যেও অনেকেই ফ্রিল্যান্সিং করে থাকেন। যাহোক, দস্তুর মত বর্ধিষ্ণু এই খাতটিতে আগ্রহীদের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। ওয়েব ডিজাইনিং অর্থাৎ ওয়েব সাইটের অবয়ব তৈরি করার এই পদ্ধতি শেখার বহু উপায় আছে। প্রোগামিংসহ বেশ কয়েকটি ব্যাপারে বিশেষ দক্ষতা অর্জন করতে পারা সফল ওয়েব ডিজাইনিং এর পূর্বশর্ত। ভালো একটি কম্পিউটার আর পর্যাপ্ত সময় ও মনোযোগ তো আছেই। পাশাপাশি মুন্সিয়ানা থাকতে হবে ইলাস্ট্রেটর, প্রোটোটাইপিংসহ খুটিনাটি অনেক বিষয়ে।
কেন হবেন ওয়েব ডিজাইনার
বিশ্বের অর্থনীতির একটা বড় অংশ ইন্টারনেট ভিত্তিক। ইন্টারনেটের ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে। যেকোন উদ্যোক্তার জন্যেই নিজস্ব একটি ওয়েবসাইট থাকা জরুরি। পেশাদার ওয়েব ডিজাইনারদের পেছনে টাকা না ঢেলে নিজেই বানাতে পারেন নিজের ওয়েবসাইট।
তাছাড়া ভালো ওয়েব ডিজাইনার হিসেবে যে আয় করাটা যে বেশ সোজা, তা তো আগেই বলা হয়েছে। পেশাদার ওয়েব ডিজাইনারদের চাহিদা এখন তুঙ্গে, তাছাড়া উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে আলাদা করে প্রতিষ্ঠা করতে হলে ওয়েব ডিজাইনিং চমৎকার পন্থা হতে পারে।
তবে সবথেকে বড় বিষয় হচ্ছে, নিজের সৃষ্টিশীলতাকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে প্রকাশ করবার জন্য ওয়েব ডিজাইনিং এর মত আদর্শ পন্থা কমই আছে। ক্লায়েন্টের চাহিদা মেনে বা নিজের ইচ্ছেমত চমৎকার সব ওয়েব সাইট ডিজাইন করার মাধ্যমে আপনার সৃষ্টিশীলতাকে রুপ দিন বাস্তবে।
ওয়েব ডিজাইনে সাফল্যের রসায়নঃ
বেশ কিছু বিষয়ে আপনার দৃষ্টি থাকতে হবে যদি আপনি ওয়েব ডিজাইনার হিসেবে সাফল্য পেতে চান। যেকোন কাজের মতোই সফলতার জন্য এখানে আপনাকে মেনে চলতে হবে কিছু নির্দিষ্ট নিয়মাবলীঃ
সময় ও ধৈর্য্য
ওয়েব ডিজাইনিং সময়সাধ্য একটি বিষয়। আপনি প্রয়োজনীয় বই পড়ে বা কোর্স শিখে দরকারী সব জ্ঞানই অর্জন করতে পারবেন, কিন্তু এগুলির কোন মূল্যই থাকবে না যদি আপনি ওয়েব ডিজাইনিং এর পেছনে যথেষ্ঠ সময় না দেন। পাশাপাশি থাকতে হবে যথেষ্ঠ ধৈর্য্য এবং নিয়মিত অনুশীলনের মানসিকতা। লেগে না থাকলে ওয়েব ডিজাইনিং এ সাফল্য পাওয়া কঠিন।
ভালো কম্পিউটার এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি
ওয়েব ডিজাইনিং এর কাজ গোটাটাই কম্পিউটার ভিত্তিক। কাজেই ভাল একটি কম্পিউটার যে লাগবে তা না বললেও চলে। সম্ভব হলে বিকল্প কাজের জন্য আরেকটি কম্পিউটার পাশে রাখতে পারেন। নিয়মিত অ্যাপগুলির আপডেট রাখতে হবে এবং অবশ্যই কাজের জন্য একটা গোছানো পরিবেশ রাখতে হবে।
ইংরেজিতে দক্ষতা
আজকাল সবকিছুতেই ইংরেজীর প্রয়োজন হয়। ওয়েব ডিজাইনিং এ অবশ্য প্রয়োজনীয় হয় প্রচলিত ইংরেজি, অর্থাৎ আপনাকে ইংরেজিতে অসাধারণ দক্ষ হতে হবে এমন কোন কথা নেই। মোটামুটি চলনসই গোছের ইংরেজি পারলেও ওয়েব ডিজাইনিং এর কাজ চালিয়ে নিতে পারার কথা।
সৃষ্টিশীলতা
এই দিকটাই আপনাকে অন্যান্য ওয়েব ডিজাইনারদের থেকে আলাদা করে দেবে। আপনি যদি নিয়মিত শীর্ষ ওয়েব সাইট বা ওয়েব ডিজাইনারদের কাজ অনুসরণ করেন তাহলে ধীরে ধীরে এই ব্যাপারে আরো পরিষ্কার ধারণা হবে। সৃষ্টিশীলতা এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার মানসিকতা আপনাকে অন্যান্যদের থেকে আলাদা করে তুলতে পারে।
কিন্তু কিভাবে শিখবেন এসব? নানা প্রচলিত কোর্স আর কর্মশালার পাশাপাশি ওয়েব ডিজাইনিং শেখার আরেকটা চমৎকার মাধ্যম হচ্ছে বই। ইংরেজি-বাংলা দুই ভাষাতেই ওয়েব ডিজাইন সম্পর্কিত বহু বই আছে যেগুলি ধাপে ধাপে অনুসরণ করলে আপনিও হয়ে উঠতে পারেন একজন সফল ওয়েব ডিজাইনার।
সময় নিয়ে একটা নির্দিষ্ট পাঠক্রম অনুসরণ করলে বাসায় বসেই যে কেউ ওয়েব ডিজাইনিং মকশো করতে পারেন। বাজারে বাংলা ও ইংরেজিতে ওয়েব ডিজাইনিং এর ওপরে বেশ কিছু বই আছে। ‘Web Design in Easy Steps’ যেমন নবীশদের জন্য বেশ চমৎকার। এর বাইরেও আগ্রহীরা ওয়েন্ডি উইলার্ডের Web Design: A Beginner's Guide ও কিনে দেখতে পারেন।
বাংলায় লেখা বইগুলির মধ্যে আছে বাপ্পী আশরাফের মাস্টারিং ওয়েব ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট। দুই খন্ডের বইটির সাথে সিডিও আছে। পড়তে পারেন নিজেই শিখি ওয়েব ডিজাইন, ওয়েব গুরু: ওয়েব ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট বাংলা ভিডিও টিউটোরিয়াল এবং মোজাহেদুল ইসলাম ঢেউ এর ৭ দিনে ওয়েব ডিজাইন ড্রিময়েবার এম এক্স। বইগুলির সাথে দেখে দেখে শেখার জন্য ডিভিডিও আছে।
No comments:
Post a Comment